সর্বশেষ

যুক্তরাষ্ট্রে দুজনের সামনে দুরকম বাধা

যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের এখনো ১৮ মাস বাকি। তবে ইতিমধ্যে নির্বাচনী দৌড় পুরোদমে শুরু হয়ে গেছে। মাঠে একে একে প্রার্থীরা জড়ো হওয়া শুরু করেছেন। কেউ কেউ মাঠে নামব নামব করছেন। এরই মধ্যে যে দুজন কাড়া–নাকাড়া বাজিয়ে নির্বাচনী মাঠে অবস্থান নিয়েছেন, তাঁদের একজন বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, যাঁর বয়স ৮০। অন্যজন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, যাঁর বর্তমান বয়স ৭৬।

সব ধরনের আলামত থেকেই স্পষ্ট, শেষ পর্যন্ত হয়তো এই দুই বুড়োই দেশের দুই প্রধান দল যথাক্রমে ডেমোক্রেটিক ও রিপাবলিকান পার্টির মনোনয়ন পেতে যাচ্ছেন। তারপরও অবস্থা যে বদলাবে না, সেটা হলফ করা যাবে না। আমি শুধু আলামতের কথা বলছি। এই দুজনের বাইরে যারা নামছি-নামব বলছেন, তাঁরা বাছাই পর্বে ধোপে টিকবেন বলে অন্তত এখনকার পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে না। তবে নির্বাচনী রাজনীতিতে ১৮ মাস দীর্ঘ সময়, ফলে অবস্থা তো বদলাতেই পারে।

বাইডেনের বয়স
সব মহলেই, এমনকি ডেমোক্রেটিক পার্টির ভেতরেও বাইডেনের বয়স নিয়ে কথা উঠেছে। ২০২৪ সালের নভেম্বরে নির্বাচন হলে বাইডেনের বয়স দাঁড়াবে ৮২ বছর। যদি পুরো চার বছর তিনি শাসন করার সুযোগ পান, তাহলে পরবর্তী নির্বাচনের আগে তাঁর বয়স দাঁড়াবে ৮৬ বছর। এখনই তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে প্রবীণ প্রেসিডেন্ট। ছয় বছর পরের হিসাব না হয় ছেড়েই দিলাম।

গত সপ্তাহে হোয়াইট হাউসে দায়িত্বরত সাংবাদিকদের সংগঠন হোয়াইট হাউস করেসপনডেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের বার্ষিক নৈশভোজ ছিল। ভোজের আগে যথারীতি বক্তারা রাজনীতিকদের নিয়ে হাসি–ঠাট্টা করলেন। বক্তাদের একজন ছিলেন বাইডেন। তিনি নিজেও নিজের বয়স নিয়ে টিপ্পনী কাটা থেকে বিরত ছিলেন না। প্রবল হাস্যরোলের মধ্যে তিনি বললেন, ‘আমার বয়স নিয়ে কথা হবে, এতে বিস্ময়ের কিছু নেই। কিন্তু বুড়ো তো একা আমি নই, ট্রাম্পও। কই, তাঁর কথা নিয়ে তো নিউইয়র্ক টাইমস–এ কোনো রা নেই।’

৮০ ও ৭৬
যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের বয়স এখন ৮০ বছর। আগামী নির্বাচনে জিতলে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে বয়সী প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। আর সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বয়স এখন ৭৬ বছর
বাইডেনের আগে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বুড়ো প্রেসিডেন্ট ছিলেন রোনাল্ড রিগ্যান। ১৯৮৪ সালের নির্বাচনে তাঁর প্রতিপক্ষ ছিলেন ডেমোক্রেটিক পার্টির ৫৬ বছর বয়স্ক ওয়াল্টার মন্ডেল। সেবারও রিগ্যানের বয়স নিয়ে তর্কবিতর্ক কম হয়নি। টিভি বিতর্কে বয়স নিয়ে কথা ওঠার আগেই রিগ্যান প্রতিপক্ষ মন্ডেলের দিকে তাকিয়ে কিঞ্চিৎ পরিহাসের সঙ্গে বললেন, ‘এই নির্বাচনী প্রচারে আমি বয়স নিয়ে কোনো বাদানুবাদ করব না। একই সঙ্গে আমি আমার প্রতিপক্ষের অল্প বয়স ও অনভিজ্ঞতাকেও কাজে লাগাব না।’

ব্যাস, ওই এক কথাতেই বয়স নিয়ে সব বিতর্কের ইতি টানলেন রিগ্যান।

গত সপ্তাহে সাংবাদিকদের নৈশভোজে অনেকটা সে ভাষা অনুকরণ করে বাইডেন বলেন, ‘কেউ কেউ বলবেন, আমি অতি প্রাচীন। আমি বলি, না, আমি প্রাজ্ঞ। অথবা (সিএনএনের সদ্য চাকরিচ্যুত টক শো পরিচালক) ডন লেমনের কথায়, আমি এখন একদম টসটসে, ‘প্রাইম টাইমে রয়েছি।’

ট্রাম্পের আইনি ঝামেলা
বাইডেনের জন্য বয়স যদি একটি অব্যাহত বিতর্ক হয়, তো ট্রাম্পের জন্য গলার ফাঁস তাঁর আইনি ঝামেলা। আর্থিক অনিয়মের জন্য তিনি ইতিমধ্যে আনুষ্ঠানিক ৩৪ দফা অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছেন। গত নির্বাচনের ফলাফল বদলানোর চেষ্টা, ৬ জানুয়ারিতে ক্যাপিটল হিলে হামলা ও হোয়াইট হাউস থেকে সরকারি নথি হাতানোর অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে আরও তিনটি মামলা ঝুলছে। এই তিন মামলাকে তিনি হয়তো ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে নিজের সমর্থকদের বুঝ দিতে পারবেন। বস্তুত, তাঁর বিরুদ্ধে এসব গুরুতর অভিযোগ সত্ত্বেও নিজ সমর্থকদের মধ্যে তাঁর জনপ্রিয়তা বিন্দুমাত্র কমেনি; বরং বেড়েছে।

আরও খবর

Sponsered content